বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ডিএমপির নতুন ডিবিপ্রধান ডিআইজি শফিকুল রূপালী ব্যাংকের ইজিএম এবং এজিএম অনুষ্ঠিত সিটি ব্যাংক ও গার্ডিয়ানের ব্যাংকাস্যুরেন্সে ৫ হাজার পলিসি বিক্রির মাইলফলক ‘টাকা ছাপানো ও বিতরণে বছরে ব্যয় ২০ হাজার কোটি টাকা’ চার্টার্ড লাইফের ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ভূমি অফিসে দালালচক্রের তৎপরতা: প্রতারক হিমুর খপ্পরে সাধারণ মানুষ সনদ জালিয়াতির : মনোহরদীর বিএনপির সদস্য সচিব দোলনের ইস্তফাপত্র ক্রিকেট ম্যাচে ওভার না দেওয়ায় গুলি, প্রাণ গেল দুই ভাইয়ের শাকিবের পারিশ্রমিক ৩ কোটি, যা বললেন প্রযোজক নড়াইলে শিক্ষার্থী আল মামুন হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সহপাঠী স্বজনদের মানববন্ধন
বাজেটে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব কৌশল আমরা দেখতে পাইনি: সিপিডি

বাজেটে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব কৌশল আমরা দেখতে পাইনি: সিপিডি

ভিশন বাংলা ডেস্ক: আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে আগামী অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাজেটে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের পর সিপিডির কার্যালয়ে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভাট্টাচার্য এ কথা বলেন।

প্রতিক্রিয়ার শুরুতেই দেবপ্রিয় অর্থমন্ত্রীর অসুস্থতার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, আমরা ওনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আজকে বাজেট পেশ করার সময় ওনার শারীরিক অবস্থা ওনাকে বিব্রতকর অবস্থায় রেখেছিল। সংসদ ও সংসদের বাইরে বাজেটোত্তর যে পর্যালোচনা চলবে সেটাতে উনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করবেন বলে আমরা আশা প্রকাশ করছি। উনি হয় তো ঘটনাক্রমে উচ্ছ্বাসবশত বলেছেন, এটা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাজেট। আমরা এটাকে আবেগের বক্তব্য হিসেবেই নিলাম।

তিনি বলেন, বাজেট উপস্থাপনায় নিঃসন্দেহে নতুনত্ব ছিল। আমরা সেটাকে স্বীকার করি, সেটাকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু প্রস্তাবনার ভিতরে সেই নতুনত্বের কতখানি উপস্থাপন হয়েছে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

দেবপ্রিয় বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন উনি বাস্তবতার নিরিখে একটি বাজেট তৈরি করতে চেয়েছেন, চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এখনও বাস্তবতার প্রতিফল দেখা যায়নি। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা উনি ২২ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু প্রকৃত অর্থে এটা ৮৫ হাজার কোটি টাকা কম হবে বলে আমাদের বিবেচনায় আছে। আগামী অর্থবছরের সূচনা বিন্দুর বিবেচনা ভ্রান্ত হয়ে গেল।

‘একইভাবে কিন্তু আপনারা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন দেখেন, সেখানেও আপনারা দেখবেন যেটা আশা করা হচ্ছে শেষ তিন মাসে হবে, সেটা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবসম্মত না। ফলে আগামী বছরের প্রাক্কলনগুলো বাস্তবতার ভিত্তিতে রচিত হলো না। এটা আমাদের বড় সমস্যার জায়গা’ বলেন তিনি।

দেবপ্রিয় বলেন, ঘাটতি অর্থের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক যে উৎস আছে তার প্রাক্কলন অতিক্রান্ত বছরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না হওয়ার কারণে প্রাক্কলনগুলো সংশয়পূর্ণ হয়ে গেল।

তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেটে আর্থিক ব্যবস্থাপনা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ না মুদ্রানীতি ও বাণিজ্যনীতি। টাকা এই মুহুর্তে অতিমূল্যায়িত রয়েছে, সে কারণে টাকার বিনিময় হার যদি নিচের দিকে সমন্বয় করা যায় তাহলে অনেক আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। টাকার অনুমিত বিনিময় হার ৮৩ টাকা দেয়া হয়েছে, যেটা বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ব্যাংক খাতের বিষয়ে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে ব্যাংকের সব থেকে বড় সমস্যা অনাদায়ী ঋণ এবং তারল্য সংকট। এবার বাজেটে যে ঘাটতি অর্থায়নের কথা বলা হয়েছে, সেখানে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার কোটি টাকা নেয়া হবে। ব্যাংক এ টাকা কোথায় পাবে। ব্যাংকব্যবস্থা আরও চাপের মধ্যে পড়বে।

দেবপ্রিয় বলেন, বিত্তশালীদের ওপর আড়াই কোটি টাকা সারচার্জ ছিল, সেটাকে ৩ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনিতেই বিত্তগুলোর (সম্পদ) দাম ঐতিহাসিক মূল্যে আছে, বাজারমূল্যে নেই। এগুলোর দাম হয় তো ১০ কোটি টাকা, কিন্তু কাগজে-কলমে আছে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা। তাছাড়া যে হারে সম্পদ বৈষ্যম বাড়ছে, তাতে এগুলোর কোনো প্রয়োজন ছিল বলে আমাদের মনে হয় না।

তিনি বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে সুনির্দিষ্ট ধরনের বেশকিছু প্রতিশ্রুতি ছিল। আমাদের ধারণা ছিল ওই সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতিগুলো উল্লেখ করে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা আমরা দেখতে পারবো। দুঃখজনকভাবে আমরা এই মুহুর্তে সেটা দেখতে পেলাম না। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি নতুন কর্মসংস্থানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এটা কোন খাতে হবে? সরকারি খাতে না বেসরকারি খাতে, গ্রামে হবে না শহরে হবে, এই ধরনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব কৌশল আমরা দেখতে পাইনি।

মন্ত্রী নিঃসন্দেহে বাজেট বাস্তবতার নিরিখে করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে বাস্তবতা সম্পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয়নি। উনি প্রত্যাশা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা বলেছেন, সেই প্রত্যাশা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা পরিপূরণ করার জন্য যে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকে বিশেষ করে নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে সেটা কিন্তু অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com